আজকে আমরা জানবো, ট্রেড লাইসেন্সের বিষয়ে। তার সাথেই জেনে নেব কিছু ভ্রান্ত ধারণা।
প্রথমত, ট্রেড লাইসেন্স কেন প্রয়োজন?
⭐এলাকা ভিত্তিক যেকোনো জায়গায় নির্দিষ্ট একটি ব্যাবসা বা profession এর জন্য ট্রেড লাইসেন্স প্রয়োজনীয়।
এবার আসি, আপনি Trade License কোথা থেকে পাবেন?
⭐আপনার স্থানীয় প্রশাসনিক আধিকারিক (Local Authority) আপনাকে ট্রেড লাইসেন্স দিয়ে থাকে। সেটা হতে পারে কোনো পৌরসভা অথবা গ্রাম পঞ্চায়েত।
এবার প্রশ্ন হল, আপনার ট্রেড লাইসেন্সের জন্য কি কি প্রমান পত্র লাগবে?
⭐প্রথমত, আপনার পরিচয় পত্র। যেমন আপনার ভোটার কার্ড, আধার কার্ড প্যান কার্ড এবং
দ্বিতীয়ত, আপনার business address proof অর্থাৎ আপনি যেই স্থানে ব্যাবসা করছেন সেই স্থানে আপনার বৈধ অধিকারের প্রমান। আপনার নিজের নামে জায়গা হলে তার দলিল (জেরক্স), ইলেক্ট্রিক বিল। যদি, আপনার ঘরটি ভাড়ার হয়, সেই ক্ষেত্রে, মালিকের থেকে ভাড়ার চালান বা রশিদ এরং NOC অর্থাৎ No Objection Certificate আপনাকে সংগ্ৰহ করতে হবে।
কিছু গুরুত্বপূর্ণ কথা আপনাকে মাথায় রাখতে হবে -
১. আপনি যদি আপনার নিজের বাড়িতেই ব্যাবসা করেন কিন্তু আপনার সেই বাড়িটির মালিক যদি আপনার বাবা-মা বা আপনার পরিবারের অন্য কোনো সদস্য হয়, তাহলে তার থেকে একটি NOC Certificate নিতে হবে, যেখানে লেখা থাকবে যে, তিনি আপনাকে আপনার বাড়ির একটি অংশে ব্যবসা করার অনুমতি দিচ্ছেন।
২. ধরে নিন, আপনার ৫০০ বর্গফুটের একটি বাড়ি, সেখানে আপনি ৫০ বর্গফুটের ঘরে ব্যবসা করবেন তাহলে, আপনাকে সেই ৫০ বর্গফুটের ঘরটিকেই আপনার অফিস হিসেবে দেখাতে হবে। তবে সমগ্ৰ বাড়িটিকে আপনার business location হিসেবে দেখানোর প্রয়োজন নেই।
৩. যদি আপনার বাড়ির মালিক অন্য কেউ হয় সেই ক্ষেত্রে, NOC-তে লেখা থাকবে, ৫০০ বর্গফুটের বাড়িটির ৫০ বর্গফুটে আপনাকে ব্যবসা করার অনুমতি দেওয়া হল।
৪. যার থেকে আপনি ভাড়া নিচ্ছেন সে যদি আপনার থেকে কোনো রকম টাকা-পয়সা নিতে অস্বীকার করেন কোনো সুসম্পর্কের জন্য, তবে সেটাও NOC Certificate -এ লেখা থাকবে যে, "আমি এনার থেকে কোনো টাকা-পয়সা নিচ্ছি না"। উদাহরণস্বরূপ বলা যেতে পারে, একজন সন্তান যখন ব্যবসা করতে চায় এবং তখন তার বাবা মায়ের নামে বাড়ি হলে, সাধারণত তাঁরা এমনিতেই অনুমতি দিয়ে দেন কিন্তু সেই NOC-তে লেখা জরুরি যে, তাঁরা কোনো রকম টাকা-পয়সা নিচ্ছেন না। আর যদি কোনো নিদিষ্ট টাকার বিনিময়ে আপনি জায়গাটি পেয়ে থাকেন, সেটাও লিখিত থাকবে।
৫. অন্য কোনো ব্যক্তির থেকে জায়গা ভাড়া নিতে হলে অবশ্যই এগ্রিমেন্ট করে নেবেন।
৬. কোনো দালাল দ্বারা প্রতারিত হবেন না। আপনি নিজে আপনার local authority-র কাছে ট্রেড লাইসেন্স বানানোর জন্য নির্ধারিত form fill up করে নিজেই নিজের ট্রেড লাইসেন্স বানাতে পারবেন। এবং এর মূল্য খুব বেশি হয় না। অনেক পৌরসভায় ১০০ টাকা থেকেও ট্রেড লাইসেন্সের মূল্য নির্ধারণ করা হয়। কিছু ক্ষেত্রে আপনার মূল্য নির্ধারিত হয় আপনি কতটা জায়গার ওপরে কাজ করছেন সেটার উপরেও।
৭. বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ট্রেড লাইসেন্সের একটি রেট চার্ট থাকে আপনার স্থানীয় প্রশাসনিক আধিকারিকের কাছে। যেখান থেকে মূল্য দেখে এক বা একাধিক ট্রেড লাইসেন্স নিতে পারেন। অনলাইনে ট্রেড লাইসেন্সের আবেদন করা যায়।
৮. যদি আপনার পপ্রাইভেট লিমিটেড / পার্টনারশীপ /অন্য কোনো ধরণের ব্যাবসায়ী পরিকাঠামো হয় তাহলে আপনার আরো কিছু প্রমাণ পত্র লাগবে। যেমন পার্টনারশীপ ডিড (partnership deed), MOA, DIN ইত্যাদি। (এই আর্টিকেলটি এক মালিকানা (sole proprietorship) পরিকাঠামোর কথা মাথায় রেখে লেখা হয়েছে)
বিশেষ দ্রষ্টব্য - এটি কোনো আইনি পরামর্শ নয়। সাধারণ মানুষকে ব্যবসায় অনুপ্রাণিত করার জন্য এই তথ্যটি জনস্বার্থে প্রচারিত। পশ্চিবঙ্গের বাইরে উপরোক্ত নিয়মাবলী ভিন্ন হতে পারে।
আপনার ব্যাবসার জন্য অনেক শুভকামনা রইলো। আপনার এই ব্যাবসায়িক পথে আমরা আপনাকে কিভাবে সাহায্য করতে পারি জানতে নিচের লিংকে ক্লিক করুন।
বিষয়:
আইন কানুন