গাছ কাটা চলছেই কিছু করা যাচ্ছেনা,
ভাবছেন আপনি কি করতে পারেন।
জানেন কি গাছ কাটা বে-আইনি?
একটু ধৈর্য ধরে পড়ুন,আপনি গাছের প্রয়োজন কতটা সেটাও যেমন জানবেন,এটাও জানবেন-----
পশ্চিমবঙ্গ বৃক্ষ (সুরক্ষা ও সংরক্ষণ) আইন ২০০৬ ও পশ্চিমবঙ্গ বৃক্ষ (সুরক্ষা ওসংরক্ষণ) বিধি ২০০৭ অনুসারে বনাঞ্চল বহির্ভূত অঞ্চলে গাছ কাটার অনুমতি পাওয়া প্রায় অসম্ভবই নয় বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সেটা নিয়ম বিরুদ্ধ।
গাছ আমাদের পরম বন্ধু। গাছ আমাদের শুধু অক্সিজেনই দান করেনা, তারা বায়ুমণ্ডল থেকে প্রচুর পরিমাণ ক্ষতিকর কারবন-ডাই অক্সাইডও শুষে নেয়।এই কারবন- ডাই-অক্সাইড হল সেই গ্রীন-হাউস গ্যাসগুলির মধ্যে অন্যতম যারা পৃথিবীর উষ্ণায়ন এবং তার ফলস্বরূপ জলবায়ুর পরিবর্তনের জন্য দায়ী।বিজ্ঞানীরা তাই গাছকে কারবনের শোষক বলেন।জাতীয় অরণ্য-নীতি অনুযায়ী দেশের মোট স্থলভাগের অন্তত ৩৩% গাছ এবং অরণ্যবেষ্টিত রাখতেই হবে নাহলে জলবায়ুর পরিবর্তনের এই ভয়ঙ্কর প্রভাব থেকে এ দেশকে বাঁচানো যাবেনা। আমাদের ভারতবর্ষে সংরক্ষিত অরণ্যের পরিমাণ মাত্র ১০% তে এসে ঠেকেছে। এর পরিমাণ আর বাড়ানোর পরিস্থিতিও নেই, এই অবস্থায় অরণ্য পরিধি বাড়িয়ে নেবার সব থেকে সহজ এবং প্রয়োজনীয় উপায় হবে যেটুকু অরণ্য আছে সেটাকে বাঁচিয়ে রাখা,জাতীয় সড়ক এবং অন্যান্য রাস্তার ধারে গাছগুলিকে বাঁচানো।একইসংগে মানুষের বসবাসের জায়গাতে নতুন গাছের সংখ্যা বৃদ্ধি করা।
গাছেদের প্রয়োজন এখানেই শেষ নয়। আমরা প্রত্যেকেই জানি একটি গাছ অনেক ছোট বড় প্রাণীর আশ্রয়।তারা সকলে মিলে এক একটি ছোট ছোট কিন্তু পূর্ণ বাস্তুতন্ত্র গড়ে তোলে। যা একদিকে যেমন প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষা করে অপরদিকে সৌন্দর্যও সৃষ্টি করে।ভাবুন তো একবার একটি সুন্দর ফলের বাগান বা গাছগাছালি ভরা গ্রামের পথ দিয়ে ভোর বেলায় হেঁটে যাবার আনন্দ কি পরিমাণ হতে পারে।তখন নিশ্চয়ই বুঝতে পারেন আমাদের জন্য গাছ কত দরকারী। গাছ একদিকে এয়ার কন্ডিসনারের কাজ করে অন্যদিকে সে বৃষ্টিও নিয়ে আসে। আবার সেই বৃষ্টির জলে মাটিকেও ধুয়ে যেতে দেয়না।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে আমাদের এই সবুজ বন্ধু অর্থাৎ গাছেদের, নিত্যকার শহরায়ন এবং উন্নয়নের আগ্রাসন থেকে বাঁচাব কি করে?
রোজই বিভিন্ন স্থান থেকে খবর আসছে রাস্তা চওড়া করার জন্যে শ'য়ে শ'য়ে গাছ কাটা হচ্ছে। কখনও জাতীয় সড়ক, কখনও সেতু বা কখনো ফ্লাইওভার বা অন্যান্য কারণ দেখিয়ে এই গাছ হত্যা চলছেই।এটাও নিশ্চয়ই শুনে থাকবেন খবর পেয়ে বেশ কিছু প্রকৃতি প্রেমিক বা এই ধরণের সংগঠন দ্রুত গিয়ে গাছ কাটা আটকাচ্ছেন এবং অবধারিত ভাবে সেই গাছ কাটার ঠিকেদারদের সংগে বচসাও হচ্ছে। এই ধরণের বেশ কয়েকটি ঘটনা ঘটে গেল পশ্চিমবঙ্গের লাটাগুড়ি, টাকি রোড বা যশোর রোডের মত জায়গায়। এগুলি প্রকৃতির সবুজকে রক্ষা করার জন্যে মানুষের সংঘবদ্ধ প্রতিরোধের ইতিহাসে মুল্যবান জায়গা করে নিয়েছে। এইসব ঘটনাতে মানুষ দেখল প্রকৃতির সংগে আমাদের নাড়ীর টান কতটা। যে টান কাউকে কাউকে প্রখর জ্বলন্ত সূর্যর নীচে যশোর রোড ধরে দীর্ঘ রাস্তা হাঁটার ডাক দেয়। সেও এক ইতিহাস। গাছ কাটলে যে আমরা নিজেরাই দ্রুত শেষ হয়ে যাব, সাধারণের মধ্যে এই চেতনা ছড়ালো। আর তারই সংগে মানুষ একজন মাননীয়া শিক্ষিকার গাছকে আঁকড়ে ধরে থেকে তাকে কাঠুরিয়াদের হাত থেকে বাঁচানোর যে চেষ্টা,তাকে সম্মান জানালো।
এখন মূল প্রশ্নগুলি এইরকম:
১) এসব ক্ষেত্রে প্রশাসনের ভূমিকা কি ?
২) এই সংক্রান্ত আইন কি বলছে ?
৩) এই ধরণের গাছ কাটা হচ্ছে দেখলে আমরা কোথায় গেলে অভিযোগ গ্রহণ করা হবে ? এবং
৪) সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন যেটা তা হল, সত্যিই কি, যে কোনও উন্নয়নের জন্য,গাছ কাটা একেবারে অপরিহার্য?
৫) আর সবশেষে যে প্রশ্নটি ঘিরে সকলের কৌতুহল সেটি হল----
যদি সত্যিই উন্নয়নের স্বার্থে গাছ কাটা একান্ত জরুরী হয় তবে সেক্ষেত্রে আইনে কি বলা আছে??যে কারণে কাটা হবে সেগুলি কি কি??কারা এই ধরণের অনুমতি দেবার যোগ্য??এবং অনুমতি দিলেও কি শর্তে দেওয়া হবে?এবং এই বিষয়ে আইনে কি বলা আছে?
এই সব প্রশ্নের উত্তর দেওয়া আছে আইনে,আমরা সেটাই তুলে ধরব।
পশ্চিমবঙ্গ বৃক্ষ (অরণ্যাঞ্চল বহির্ভূত এলাকায় সুরক্ষা ও সংরক্ষণ) আইন,২০০৬ এবং পশ্চিমবঙ্গ বৃক্ষ (অরণ্যাঞ্চল বহির্ভূত এলাকায় সুরক্ষা ও সংরক্ষণ) বিধি ২০০৭ এ ওপরের সব কটি প্রশ্নের উত্তর পেয়ে যাব:
আইন অনুযায়ী:
১) যে কোন উদ্ভিদের, ভূমি থেকে বুক সমান উচ্চতায়, কাণ্ডের ব্যাস যদি কমপক্ষে ১০ সেন্টিমিটার এবং তার উচ্চতা ৪ফুট৬ইঞ্চি বা ১.৩৭ মিটার হয়,তবে তাকেই বৃক্ষ বলা হবে।
২)আইনটির ৪ নং ধারা অনুযায়ী, অরণ্য বহির্ভূত এলাকায় কোন ব্যক্তিই তার নিজের ইচ্ছায় উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের থেকে অনুমতি ছাড়া একটি গাছও কাটতে পারবেননা।
৩) এখানে কর্তৃপক্ষরা হলেন,
ক) বনবিভাগের রেঞ্জ অফিসার,গ্রামীণ এলাকার জন্য
খ) ডিভিসনাল ফরেস্ট অফিসার,কলকাতা মিউনিসিপ্যাল করপোরেসনের ইউটিলাইযেসন শাখা এবং
গ) ডিভিসনাল ফরেস্ট অফিসার,অন্যান্য চিহ্নিত এলাকার জন্য।
৪) পশ্চিমবঙ্গ বৃক্ষবিধি ২০০৭ এর ৩ নং ধারার ৩ নং উপধারা অনুসারে এই আইনে গাছের ডালপালা ছাঁটার বিষয়টি আলাদা গুরুত্ব পেয়েছে।বলা হয়েছে গাছের জীবন সংশয় না হয় এমনভাবেই ডালপালা ছাঁটা বা কাটা যাবে।সেই অনুমতিও পাওয়া যাবে যদি সেটি জনস্বার্থে,বিদ্যুৎবাহী তারের রক্ষণাবেক্ষণে,পার্ক বা উদ্যানের রক্ষণাবেক্ষণ ও সৌন্দর্যায়নের কাজে লাগে অথবা যদি গাছের কোন শাখা স্থানীয় জনগণ বা কোন বাড়ির অসুবিধার কারণ হয় বা তারজন্য অন্য কারুর জীবন সংশয়ের কারণ হয় তবেই।
৫)পশ্চিমবঙ্গ বৃক্ষ ধারা ২০০৭ এর ৪ নং ধারা অনুসারে উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ কোন গাছ কাটার অনুমতি কেবলমাত্র তখনই দিতে পারেন,যদি সেই গাছ স্থানীয় মানুষের ভীষণ অসুবিধার সৃষ্টি করে,কোন বাড়ি বা সম্পত্তির ক্ষতি করে অথবা কারুর জীবন সংশয় হতে পারে এই আশঙ্কায়,জনজীবন বিপর্যস্ত হলে,গাছটির প্রাকৃতিক দুর্যোগে বা স্বাভাবিক ভাবে মৃত্যু হয়ে থাকলে,গাছটি সামাজিক বনসৃজনের অংশ হলে,বৃক্ষপালনের জন্য প্রস্তুত পূর্ণায়ু গাছ হলে,কোন জমির মালিকের পারিবারিক কারণ যেমন,চিকিৎসা, বিবাহ,পড়াশুনা বা বাড়ি মেরামতির জন্য অর্থের প্রয়োজন হলে বা অনেকসময় জমি বিক্রি বা সেই সংক্রান্ত বিবাদ মেটানোর জন্যেই অনুমতি দেয়া যেতে পারে।
৬)পশ্চিমবঙ্গ বৃক্ষ আইন ২০০৬ এর ৯ নং ধারা অনুসারে কোন জমির ডেভলপার গাছ কাটার অনুমতি তখনই পেতে পারেন,যদি তিনি প্রজেক্টের ছাড়পত্র পাবার আগেই সবিস্তারে পরিপূরক বৃক্ষরোপণের প্রস্তাব বা নির্ধারিত অর্থ জমা দেবার অঙ্গীকার করেন।সেক্ষেত্রে যতগুলি গাছ কাটা হবে তার দ্বিগুণ থেকে পাঁচগুণ সংখ্যক লাগানো হলেই প্রজেক্টের ছাড়পত্র পাওয়া যাবে।
৬) গাছ কাটার জন্য জরিমানা ও শাস্তির বিধানগুলি হল এইরকম:
ক) যদি কোন ব্যক্তি, বা প্রতিষ্ঠান,ঠিকাদার,ফার্ম বা কোম্পানি বা বেসরকারি বা এমনকি সরকারি সংস্থাও পশ্চিমবঙ্গ বৃক্ষ আইন২০০৬ এর ৪ নং ধারার বিরুদ্ধে গিয়ে গাছ কাটে তবে ওই একই আইনের ১১ নং ধারা মোতাবেক উক্ত ব্যক্তি বা দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিগণ ১ বছরের কারাদন্ড বা ৫০০০ টাকা জরিমানা অথবা দুটিই একসাথে ভোগ করবেন।
খ) যদি কোন ব্যক্তি বা সংস্থা বৃক্ষ আইনের ৯ নং ধারা অনুসারে গাছ লাগানোর পরিকল্পনা না করেন,তবে তিনি বা ওই প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি ২ বছর পর্যন্ত কারাদন্ড বা ১০০০০ টাকা জরিমানা বা দুটিই ভোগ করবেন।
অতএব এ পর্যন্ত আমরা কি কিছু জানলাম?
অবশ্যই জানলাম যে,আইনের প্রণেতাগণ অকারণে বা শুধুমাত্র কাঠ বিক্রির মুনাফার জন্যেই গাছ কাটা যাবেনা সেটাতেই জোর দিয়েছেন।এখন এই আইনের প্রয়োগটারই প্রয়োজন।
পরবর্তী পদক্ষেপ কি?
আমরা জানি আইন কি বলছে।
গাছ কাটা চলছে দেখলেই নিকটবর্তী থানায় জানান।আইনবিরুদ্ধ কিছু হলেই অভিযোগ জানান।এই পুস্তিকা আপনার কাজে আসবে তখন। একইসংগে বনদপ্তরের রেঞ্জ অফিসার ও ডি.এফ.ও কেও জানান।
এবার প্রশ্ন হল,গাছ কি আমাদের উন্নয়নের পথে সত্যিই কোন বাধা!
সত্যি বলতে এটা এক মানসিক বদ্ধতা।এই ধারণা বদ্ধমূল হয়েছে কয়েকটি কারণে,যেমন নির্মাণ কাজে বিপুল পরিমাণ কাঠের চাহিদা,আসবাবের কোম্পানি ও করাতকল গুলির মুনাফার লোভ।তাছাড়া আর একটি বিষয় হল গাছ কে আমরা কাঠ হিসেবেই দেখে এসেছি।গ্রাম্য এলাকাগুলিতে পশুখাদ্য ও জ্বালানীর সরবরাহের জন্য একধরণের সামাজিক ও কৃষিভিত্তিক বনসৃজন করা হলেও বড় গাছগুলি তার কাঠের মূল্যের জন্য ভয়ানক বিপদের মুখোমুখি।
পশ্চিমবঙ্গ বৃক্ষ আইন ২০০৬ অনুসারে যে প্রজাতির গাছগুলি বিশেষ অনুমতি ছাড়া কিছুতেই কাটা যাবেনা সেগুলি হল:
ম্যানগ্রোভ,মেহগনি, সেগুন,শাল,মহুয়া, শিশু,গামার,চাঁপ,ক্ষিরীশ,কেন্দু প্রভৃতি।
উন্নয়নের সংগে গাছেরাও যে মিলেমিশে থাকতে পারে তার অনেক উদাহরণ দেখাই,
ক) যশোর রোড ধরে পেট্রাপোল সীমান্তের দিকে শেষ কয়েক মাইলে রাস্তা সম্প্রসারণ করা হল পুরনো গাছ গুলিকে না সরিয়ে পাশ দিয়ে।তাই তারা নতুন চওড়া রাস্তার মাঝখানে দাঁড়িয়ে আছে।
খ) এবার আমরা যদি রাজ্যের রাজভবনের চারপাশে লোহার বেড়াগুলির দিকে দেখি,দেখব বেড়াগুলিকে এমন ভাবে ডিজাইন করা হয়েছে গাছের বাঁকা ডালগুলিরও কোন ক্ষতি না হয়।
গ) এবার বলি,পার্ক সার্কাস ময়দানে রাস্তা পরিবর্তন করার জন্য পুরনো একটি গাছকে না কেটে ক্রেনের সাহায্যে অতি সহজেই মূল শুদ্ধ তুলে অন্য স্থানে বসানো হল।
এই উদাহরণ আমাদের চিন্তাধারা পাল্টাতে বলছে,যে গাছ বা বনানী যথাসাধ্য বাঁচিয়েও উন্নয়ন করা যায়।এবং সেটাও আমাদেরই ভালর জন্যে।
পশ্চিমবঙ্গ বৃক্ষ আইন ২০০৬ কিন্তু গাছের বিশাল পরিবেশগত মূল্য স্বীকার করে নিয়েছে,একইসঙ্গে এগুলির সুরক্ষিত রাখার আহ্বানও রেখেছে,বিশেষত যেগুলি হেরিটেজ (ঐতিহ্য মন্ডিত) তকমা পেয়েছে।
হেরিটেজ বৃক্ষ কি?
যে গাছের বয়স ১০০ বছর বা তারও বেশি, যার কান্ডের ব্যাস ভূমি থেকে বুকসমান উচ্চতায় ১.৫মিটার বা তার বেশি , যার উচ্চতা ৪০ ফুট বা তার বেশি এবং যার ওপরের ছায়া ক্ষেত্র যশোর রোডের গাছগুলির মত, যে সব গাছ আমাদের ইতিহাস আর জাতি সত্তা র সাথে ওতপ্রোতভাবে যুক্ত সেই সব গাছ কে হেরিটেজ তকমা দেওয়া যাবে।হেরিটেজ কমিটি এইগুলির যত্নের টাকা বরাদ্দ করে।অর্থাত এই গাছ গুলি টাকারও যোগান দিতে পারে।যশোর রোডের গাছগুলি ব্রিটিশ আমলেরও আগে থেকে দাঁড়িয়ে আছে।এই দেশেই একই ধরণের যে গাছ গুলি ইতিমধ্যেই হেরিটেজ তারমধ্যে দুটি হল::১) হাওড়া জেলায় বোটানিক্যাল উদ্দ্যানের সেই বিখ্যাত বটগাছ,২) বিহারের বুদ্ধগয়ায় সেই বোধিবৃক্ষ। তাই হেরিটেজ গাছগুলির সুরক্ষা ও সংরক্ষণ আমাদের প্রশাসনের প্রধান লক্ষ্য হওয়া উচিত।
গাছ ধর্মেওপূজিত হয়:
হিন্দুধর্ম ও বৌদ্ধধর্ম ছাড়াও সারা দেশ জুড়ে বিভিন্ন ধর্মে বট, পিপল, নিম, কদম্ব, আম এছাড়াও বহু গাছকে পূজার আসনে বসানো হয়। এমনকি এটি একটি পবিত্র ঐতিহ্য হিসেবেও পরিচিত। এই সমস্ত গাছগুলির পরিবেশের জন্য অসামান্য ভূমিকা রয়েছে এবং তাদের মধ্যে বেশিরভাগই keystone species (প্রজাতি যার উপর বহু প্রজাতি নির্ভর) হিসেবে আখ্যায়িত হয়েছে। এই বিজ্ঞান এবং বিশ্বাস এর সন্নিপাত কে মান্যতা দেওয়া উচিত এবং তাদের পবিত্রতার বিষয় গুলিই তাদের সুরক্ষার চাবিকাঠি হতে পারে। পঃবঃ বৃক্ষ আইন, ২০০৬, এই আখ্যায়িত পবিত্র বৃক্ষগুলির উপর বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছে। যেখানেই এইসব গাছ এবং উদ্যান গুলির খোঁজ পাওয়া যাবে,তাদের সুরক্ষার্থে জায়গার বিবরণ রিপোর্ট করতে হবে।
দ্য গ্রীন হাইওয়ে পলিসি-২০১৫:
দেশের সংবহন, সড়ক এবং হাইওয়ে মন্ত্রক, "দ্য গ্রীন হাইওয়ে পলিসি (বৃক্ষরোপণ,অন্যত্ররোপন, সৌন্দর্যায়ন এবং তার রক্ষনাবক্ষন)-২০১৫ প্রকাশিত করেছে।বৃক্ষ রোপণের প্রকৃতি এবং গুণমান রক্ষনাবেক্ষন নিশ্চিত করার জন্য , সব ন্যাশানাল হাইওয়ের সমস্ত প্রকল্প খরচের(TPC) ১% বরাদ্দ করে "গ্রীন হাইওয়ে ফান্ড" আলাদা করে তৈরি করা হয়েছে এবং ন্যাশানাল গ্রীন হাইওয়ে'জ় মিশন-NHAI কে এই প্রকল্পের বাস্তবায়নের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। লক্ষ্য একটাই,যাতে করে কারবন এর দূষণ কমিয়ে সেই মাত্রাকে ধরে রাখা,যার পরিমাণ বছরে ১২ লক্ষ মেট্রিক টন কারবন। কারবন নিঃসরণের মাত্রা ৩৫% এ নামিয়ে আনার জন্য আন্তর্জাতিক জলবায়ু পরিবর্তন চুক্তি(CoP 21 Summit) তে ভারত অঙ্গীকার বদ্ধ।
"কোন জিনিষ সঠিক তখনই যদি এটার অভিমুখ জৈবিক কমিউনিটির বিশুদ্ধতা, স্থায়িত্ব এবং সৌন্দর্য্য সংরক্ষনের দিকে হয়। এটাই ভুল যখন এটার অভিমুখ বদলে যায়।(p.262)" -Aldo Leopold : A Sand County Almanac and Sketches Here and There"
এবার আপনিই বলুন এত কঠোর একটি আইন যখন আপনার অস্ত্র,একে ব্যবহার না করে,পৃথিবীকে মরূভূমি হয়ে যেতে দেবেন?
এই আইনের বিষয়টি সবার মধ্যে ছড়িয়ে দিন।
- সমীর বসু
বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ এটি কোনো আইনি পরামর্শ নয়। সাধারণ মানুষকে তাদের অধিকারের কথা জানানোই আমাদের উদ্দেশ্য। যেই সকল দণ্ডবিধির কথা উল্লেখ করা হয়েছে তার ভিতরে সাব সেকশন (sub-section), ধারা ও উপধারা ভালো করে পরে দেখে নেবেন।
কৃতজ্ঞতাঃ ডঃ অমিতাভ আইচ
বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ এটি কোনো আইনি পরামর্শ নয়। সাধারণ মানুষকে তাদের অধিকারের কথা জানানোই আমাদের উদ্দেশ্য। যেই সকল দণ্ডবিধির কথা উল্লেখ করা হয়েছে তার ভিতরে সাব সেকশন (sub-section), ধারা ও উপধারা ভালো করে পরে দেখে নেবেন।
বিষয়:
আইন কানুন